গৃহে খাদ্য সংরক্ষণ পদ্ধতি (পাঠ ৪)

সপ্তম শ্রেণি (মাধ্যমিক ২০২৫) - গার্হস্থ্যবিজ্ঞান খাদ্য, পুষ্টি ও স্বাস্থ্য | - | NCTB BOOK
33
33

আমরা প্রকৃতি থেকে যে খাদ্যগুলো পাই সেগুলো সবই পচনশীল। পচন ক্রিয়ার ফলে মানুষের উৎপাদিত খাদ্যসমূহ অনেকাংশে নষ্ট হয়। এই নষ্ট হওয়াকে রোধ করার জন্য খাদ্য সংরক্ষণ পদ্ধতি সম্পর্কে জানা দরকার। আমরা বিভিন্নভাবে খাদ্য সংরক্ষণ করতে পারি।
কুল, বরই, আম শুকিয়ে রাখা, নোনা ইলিশ, বিভিন্ন মাছের ও মাংসের শুঁটকি ইত্যাদি আমাদের দেশে প্রচলিত অতি পুরাতন সংরক্ষণ পদ্ধতি। এসব সংরক্ষণ পদ্ধতিগুলোর মাধ্যমে মূলত খাদ্য থেকে পানি শুকিয়ে পচন রোধ করা হয়।

গৃহে খাদ্য সংরক্ষণের প্রধান উদ্দেশ্যগুলো হচ্ছে-

  • এক মৌসুমের খাদ্য অন্য মৌসুমে খাওয়ার জন্য।
  • উৎপাদিত বাড়তি খাদ্যের অপচয় রোধ করার জন্য।
  • খাদ্যে জীবাণু ও এনজাইমের ক্রিয়া বন্ধ করা।
  • খাদ্যের পুষ্টিমূল্য বজায় রেখে খাদ্যের চাহিদা মেটানো।

গৃহে খাদ্য সংরক্ষণের কয়েকটি সাধারণ পদ্ধতি
রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ- মাছ-মাংস ও টাটকা শাকসবজির পানি প্রাকৃতিক উপায়ে রোদে শুকিয়ে নিতে পারলে পচন রোধ করা যায়। অনেকদিন ভালো থাকে। আলু, গাজর, বাঁধাকপি, মটরশুঁটি, কুল, বরই, আম, মাছ, মাংস সঠিক নিয়মে রোদে শুকিয়ে নিলে অনেক দিন খাওয়া যায়।

গুড় ও চিনিতে সংরক্ষণ- গুড়, চিনি খাদ্য সংরক্ষক দ্রব্য হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ। গুড়ের সিরায় বরই, তেঁতুল, আম ইত্যাদি অনেকদিন রেখে খাওয়া যায়। চিনি দিয়ে চালকুমড়া, আম, বেল ইত্যাদির মোরব্বা বানিয়ে অনেকদিন খাওয়া যায়। স্বাদ-গন্ধ ঠিক রাখার জন্য মাঝে মাঝে রোদে দিতে হয়।

সিরকা ও তেলে সংরক্ষণ- সিরকার ও তেলে সবজি ও ফলমূল এবং মসলা সংরক্ষণ করা যায়। সিরকা বা ভিনেগার খাদ্যে জীবাণু বৃদ্ধি রোধ করে। যেমন- সবজি বা ফলের পিকেলস। হলুদ, মরিচ, জিরা, ধনে ইত্যাদি মসলা দিয়ে তেলে ডোবানো আচার অনেকদিন পর্যন্ত ভালো থাকে।

গুড় ও চিনিতে সংরক্ষণ (জেলি, মিষ্টি আচার) সিরকা ও তেল সংরক্ষণ

লবণে সংরক্ষণ- লবণের দ্রবণ জীবাণু বৃদ্ধি রোধে বিশেষ উপযোগী।

লবণে সংরক্ষণ

খাদ্যে লবণ মাখলে জীবাণু কোষ থেকে পানি শুকিয়ে যায়। যেমন- ইলিশ মাছের কাটা টুকরা লবণ মাখিয়ে নোনা ইলিশ তৈরি হয়। কাঁচা আম, চালতা, আমলকী লবণ ও হলুদ মাখিয়ে রোদে শুকিয়ে অনেকদিন রাখা যায়।

বরফে সংরক্ষণ- তাজা, টাটকা শাকসবজি পরিষ্কার করে পানি ঝরিয়ে পলিথিনে মুড়ে ফ্রিজে রাখা হয় এবং যাতে ঘেমে না পচে সেজন্য পলিথিন ব্যাগে দুচারটি ফুটো করে দিতে হয়। তবে ফ্রিজের নিচের তাপমাত্রা ৪৫° ফা.-এর বেশি না হয়। ফ্রিজের যে চেম্বারে খাবার জমে বরফে পরিণত হয় তাকে ফ্রিজার বলে। এর তাপমাত্রা ১৮° সে. পর্যন্ত হয়ে থাকে। আর যে চেম্বারে খাবার বরফে পরিণত হয় না কিন্তু ঠান্ডা থাকে তাকে রেফ্রিজারেটর বলে। এই রেফ্রিজাটরের তাপমাত্রা ২° থেকে ৬° সে. পর্যন্ত হয়। দ্রুত পচনশীল খাদ্য যেমন- মাছ-মাংস, দুধ প্রভৃতি ফ্রিজারে রেখে দীর্ঘদিন রেখে খাওয়া যায়।

কাজ ১- খাদ্য সংরক্ষণের তিনটি পদ্ধতি বর্ণনা করো।
Content added By
টপ রেটেড অ্যাপ

স্যাট অ্যাকাডেমী অ্যাপ

আমাদের অল-ইন-ওয়ান মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে সীমাহীন শেখার সুযোগ উপভোগ করুন।

ভিডিও
লাইভ ক্লাস
এক্সাম
ডাউনলোড করুন
Promotion
;